শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

মানিকগঞ্জে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি॥ হালকা কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় চলছে শীতের আমেজ। বছরজুড়ে খেজুর গাছগুলো অযত্নে পরে থাকলেও শীতকালে গাছের চাহিদা ও যত্ন বেড়ে যায়। রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা এখন থেকেই গাছের অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ঝেড়ে ফেলার পরে গাছের বুক চিড়ে সাদা ছাল বের করার কাজ করছেন।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছগুলোকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীত এলেই খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরির ধুম পড়ে যায় গ্রামটিতে। বাংলাদেশে এক নামে পরিচিত হাজারী গুড় এই হরিরামপুরেই তৈরি হয়ে থাকে। উপজেলার শিকদারপাড়া গ্রামের গাছি তেক্কা মিয়া জানান, প্রায় ৩০ বছর যাবত খেজুর গাছ ঝোড়া ও গুড় তৈরির কাজ করেন। মূলত এটা তাদের পৈত্রিক পেশা। এবার ৩০টা খেজুর গাছ নিয়ে গুড় তৈরির কাজ করবেন তিনি।

বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা দিনদিন কমে যাওয়ায় রস, গুড় ও পাটালি গুড়ের দাম বেশি হয় বলে জানান তিনি। উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের আনোয়ার এ বছর প্রায় ২৫টি খেজুর গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করছেন। কয়েক দিন পর থেকেই খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। এই মৌসুমে রস চোরের উপদ্রব অনেক বেড়ে যায়। তাই রাত জেগে পাহারা দিতে হয় গাছগুলোকে এমনটাই জানান তিনি।

আনোয়ার আরো জানান, যারা খেজুর রসের পাগল তারা শহর থেকে ভোর হওয়ার আগেই ছুটে আসেন আমাদের গ্রামে। কাঁচা খেজুর রস প্রতি ভাড় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করি। তাছাড়া রস জাল দেবার পরে গুড় তৈরি করেও বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে থাকি। প্রতি কেজি খাঁটি গুড় ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, প্রতি কেজি হাজারি গুড় ১২শ থেকে ১৪শ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল গফফার জানান, সারাদেশে পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ রোপণ করা দরকার। তাহলে শীত মৌসুমে উপাদেয় খেজুর রস দেশীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের বিরাট ভূমিকা রাখতে পারবে। খেজুরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে দেশি চারার পাশাপাশি বিদেশি চারাও রোপণ করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com